Header Ads

সৎ কাজের আদেশ করো,অসৎ কাজ হতে বিরত থাকো।

হুজুর+হুজুরনী

_______________________হুজুর+হুজুরনী 
Nadia Islam Nipa        আপুর ফেসবুক টাইম লাইন থেকে......
 
(১ম পর্ব)

ইশিতা: এই হুজুর , তুমি আমার দিকে তাকাও না কেন , আমি কি কম সুন্দরী !
সুয়ুদঃ আপনি যত সুন্দরী হন না কেন তাতে আমার কিছু যায় আসেনা , কেননা পর নারীর দিকে তাকানো জায়েজ না।
এটা আমার আল্লাহর হুকুম।
আর আপনি যে সৌন্দর্যের লোভ দেখিয়ে আমাকে ডাকছেন , তাকে আমি প্রত্যাখান করছি ঐ আল্লাহর জন্য যে আপনার চেয়েও সুন্দর সুন্দর জিনিস সৃষ্টি করেছেন।
তাহলে সেই আল্লাহ না জানি কত সুন্দর !
ইশিতাঃ যত্তসব !


(২য় পর্ব)

ক্লাসে সবাই গল্প করছে , গল্পের টপিক কেমন ছেলে বিয়ে করতে চাই?
কেমন মেয়ে বিয়ে করতে চাই?

হঠাৎ করে ক্লাসের সবচেয়ে স্মার্ট স্টাইলিশ মেয়েটা বলে উঠল এই সবাই চুপ , আমি এখন একজনকে সামনে এসে বলতে বলব কেমন মেয়ে সে বউ হিসেবে চায় ।
সবাই রাজি?
-সবাই ইয়েসসসস।

ইশিতাঃ এখন সামনে এসে ভবিষ্যত স্ত্রী সম্পর্কে বলবে আমাদের ক্লাসের হুজুর সুয়ুদ !

সুয়ুদ আশ্চর্য হয়ে গেল !
বুঝতে পারল তাকে শিক্ষা দেয়ার জন্যই ইশিতা এমন করছে।

সুয়ুদ ও সামনে গেল।

সুয়ুদঃ আমি এমন একজন স্ত্রীকেই আশা করি , যার কন্ঠস্বর শোনা প্রথম পর পুরুষ হবো আমি ।
তার সৌন্দর্য দেখা প্রথম পুরুষ হবো আমি।
তার ভালবাসা পাওয়া প্রথম পুরুষ হবো আমি !

ইশিতা হঠাৎ থামিয়ে দিয়ে , হইছে হুজুর সাহেব এসব স্বপ্নের কথা বাদ দেন , এমন মেয়ে এই দুনিয়ায় নাই , জান্নাতে গিয়া পাবেন !

সবাই হাসি .........

সুয়ুদ তখন হঠাৎ কুরানের এই আয়াত তেলোওয়াত করলো
যার অর্থঃ

- “দুশ্চরিত্রা নারী দুশ্চরিত্র পুরুষের জন্য এবং দুশ্চরিত্র পুরুষ দুশ্চরিত্রা নারীর জন্য (উপযুক্ত)। (একইভাবে) সচ্চরিত্রা নারী সচ্চরিত্র পুরুষের জন্য এবং সচ্চরিত্র পুরুষ সচ্চরিত্রা নারীর জন্য (উপযুক্ত)। [ আল কুরান ]

সবাই চুপ হয়ে গেল ।


(৩য় পর্ব)

ইশিতা ঠিক করলো ,আবদুল্লাহকে মার খাওয়াবে , যেই ভাবা সেই কাজ , তার কিছু ছেলে বন্ধুকে বলে দিলো তাকে শায়েস্তা করার জন্য।
বিকালে ক্লাস শেষে আবদুল্লাহ যখন যাচ্ছিলো , তখন একটা ছেলে এসে তাকে একটা গলির মধ্যে নিয়ে গেলো ।

একটা ছেলে বলে উঠল , কিরে হুজুর তোর নাকি অনেক ভাব!
যেই মেয়েরে আমরা চাইয়াও পাইনা , সেই মেয়ের দিকে নাকি তুই ফিরেও তাকাসনা! তারে দাম দেসনা! , বেশি ভাব বাড়ছে! না!
আবদুল্লাহঃ গুনাহ থেকে বাঁচা যদি ভাব হয় তাহলে আমি সত্যিই ভাব মারি ।

--কিরে হুজুর খুব চেটাং চেটাং কথা বলিস দেখছি !

আবদুল্লাহঃ দেখো ভাইয়েরা , আমরা হচ্ছি পুরুষ , পুরুষ থাকবে পুরুষের মত , সত্যিকার পুরুষরা কখনো মেয়ের পিছনে ঘুরেনা !
আর তোমরা কি না একটা মেয়ের কথায় আমাকে মারতে আসছো!
লজ্জা হওয়া উচিৎ তোমাদের ।

--কি আমরা সত্যিকার পুরুষ না ! দাড়া দেখাইতাছি মজা ।

আবদুল্লাহঃ
শুনো ভাইয়েরা , নিজেদের এত নিচু করোনা , নিজেকে সম্মানিত করো , আল্লাহর হুকুম মত চলো , তাহলে আর মেয়েদের পিছনে ঘুরা লাগবেনা , সমগ্র দুনিয়া তোমার পিছনে ঘুরবে।
আর মৃত্যুর পর পাবে এমন জান্নাত যেখানে তোমার জন্য থাকবে এমন নারী যাকে কেউ কখনো দেখেনি , যাকে কেউ কখনো স্পর্শ করেনি ।
ছেলেরা আবদুল্লাহকে মারতে যাবে,
হঠাৎ আবদুল্লাহর এর বন্ধু হিমেল গলিতে আসল !
হিমেল আবার এলাকার বড় ভাই !
হিমেলঃ কিরে আবদুল্লাহ! তুই এখানে কি করিস ? কোন ঝামেলা?
সবাই তো ভয়ে থতমত ।
সুয়ুদঃ আরে নাহ্!
ছোট ভাই গুলাকে একটূ দ্বীনের দাওয়াত দিতে আসলাম।
হিমেলঃ খুব ভাল , ঐ তোরা হুজুরের কথা ঠিক মত শুনিস, আমার ভাল বন্ধু , নামাজে যাইস তোরা।
সবাই ভীত গলায় বললঃ অবশ্যই ভাই ।
আবদুল্লাহ সবাইকে সালাম দিয়ে চলে আসল।



( ৪র্থ পর্ব)


ইশিতাঃ এই হুজুর ছেলেটা আমার মাথা নষ্ট করে ফেলেছে।
মিথিলাঃ কি হইছে রে ! তোর ,আমি বুঝিনা তোর মত একটা স্মার্ট মেয়ে কিভাবে এই হুজুরের জন্য এত পাগল হইছস!
ইশিতাঃ পাগল হইছি কে বলছে ! অই হুজুরটায় আমার মত সুন্দরি মেয়েকে পাত্তা দেয়না ! ওর এত দেমাগ কিসের !
ওকে শায়েস্তা করার জন্য লোক পাঠাইছি , এখনি ওরা আসতাছে।
সায়েম আসতেছে ।
ইশিতা দৌড়ে গিয়ে,
-- কিরে সায়েম দিছিস তো হুজুরটারে ভাল মতন।
সায়েমঃ তোদের মত মেয়েদের চটকানা দিতে হয়।
নিজেরা তো খারাপ ই সকল ছেলেকে নাকে তেল দিয়ে ঘুরাস , যারা ভাল আছে, ভাল থাকতে চায় , তাদেরও জ্বালা দিস।
আজ আমি তোদের মত মেয়েদের বুঝতে পেরেছি।
ঐ হুজুর ভাই আজ আমার চোখ খুলে দিয়েছে।
আজ থেকে পুরুষের মতন চলবো, কুকুরের মতন মেয়েদের পিছনে ঘুরবোনা !
ইশিতা মনে হলো শকড খেলো......

ক্লাসে বসে আছে আবদুল্লাহ !
ইশিতা সবাইকে ইশারা করলো ক্লাস থেকে চলে যেতে !
সবাই চলে গেলো !

ক্লাসের মাঝে শুধু ইশিতা আর আবদুল্লাহ।
আবদুল্লাহ মাথা নিচু করে বসে আছে ।
ইশিতা আজ টি শার্ট , জিন্স পরে এসেছে ,
বাধা চুল ছেড়ে দিয়েছে সে ,
ইশিতাঃ এ্যই হুজুর আমার দিকে তাকাও !
আবদুল্লাহঃ জাহান্নামের দিকে তাকানোর সাহস আমার নেই !
ইশিতাঃ কি বললে?
আমি জাহান্নাম !
এই হুজুর ,জানো এখন আমি এমন কিছু করতে পারি যার জন্য তুমি কোথাও আর মুখ দেখাতে পারবানা !
জেলেও যেতে হতে পারে নারী নির্যাতন কেসে !
আবদুল্লাহঃ ইউসুফ (আঃ) জুলেখাকে ভয় পায়নি , আশা ছাড়েনি আল্লাহর উপর থেকে ,
আর আল্লাহই তার জন্য সহজ করে দিয়েছেন ।
ইশিতার মাথা আরো গরম হয়ে গেছে ।
সে খপ করে আবদুল্লাহর হাত ধরে হাতে হাত রাখলো !
আবদুল্লাহ এতো অবাক হলো , যেন তার মৃত্যু সে দেখে ফেলেছে !
তার সমস্থ শরীর যেন প্রকম্পিত হলো ভয়ে!
সে এক টানে হাতটা সরিয়ে নিল ।
কি যেন হলো তার মাঝে , সে মাথা নিচু করলে বসলো।
ইশিতার ব্যাপারটা খারাপ লাগলো।
বললঃ এই হুজুর কি হইছে , স্যরি! খুব স্যরি আমি আসলে রাগের মাথায় এমন করে ফেলেছি ।
আবদুল্লাহ এই প্রথম ইশিতার দিকে তাকালো !
ইশিতা দেখলো নূরের আলোয় উজ্জ্বল এক অপরূপ সুন্দর নূরের আলোয় ভরপুর এক চেহারা , গাল বেয়ে টলটলিয়ে পানি বেয়ে পড়ছে!
আবদুল্লাহঃ দেখেন ম্যাডাম ,
এই জীবনটা খুবই সংক্ষিপ্ত ।
এটা ফূর্তির জায়গা না ।
নিজের ইচ্ছা মত চলার জায়গা না।
ভোগ করার জায়গা না।
নিজের খায়েশ পূরন করার জায়গা না।
চলবে........

2 comments:

Powered by Blogger.